বিগত ১০ মে/২০২৪ ইং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ (squadron leader Asim Jawad) নামক একজন সৈনিকের বিমান দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ঘটেছে। চলুন জেনে নিই সেই সাহসী সৈনিক সম্বন্ধে..
সূচী:
একনজরে
পূর্ণ নাম | স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ |
পিতা | ডা: মোহাম্মদ আমানউল্লা |
মাতা | নিলুফা খানম |
স্ত্রী | অন্তরা আক্তার |
সন্তান | ০২ টি, (কন্যা ০১ টি, পুত্র ০১ টি) কন্যার নাম আইজা |
নানা | মরহুম মোহাম্মদ রউফ খান |
ঠিকানা | মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে |
জন্ম তারিখ | ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ |
মৃত্যু তারিখ | ১০ মে ২০২৪ ইং |
পেশা | বিমান সৈনিক |
বয়স | ৩২ বছর |
ফেসবুক লিংক | জানা যায়নি |
ইমেইল | জানা যায়নি |
মোবাইল নং | জানা যায়নি |
- তাইজুল ইসলাম: একজন প্রতিভাবান বাংলাদেশী ক্রিকেটার
- ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু: হিন্দু জাগরণ ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত
- ঢামেকের ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা: এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা । papia akter sorna 2024
- বৈভব সূর্যবংশী: ভারতীয় ক্রিকেটের উদীয়মান তারকা । Vaibhav Suryavanshi Rising star of Indian cricket
- নিঝুম মজুমদার-হারপিক মজুমদার কে ? কেন তাকে এই নামে ডাকা হয় ? Why is Nijhoom Majumder called Harpik Majumdar 2024?
squadron leader Asim Jawad এর পরিচয়
আসিম জাওয়াদ ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আমানউল্লা যিনি পেশায় একজন ডাক্তার। আর মা নিলুফা খানম একজন গৃহীনি। তার স্ত্রীর নাম অন্তরা আক্তার। তার ০২ টি সন্তান রয়েছে। তার মধ্যে ১ টি ছেলে ও ১ টি মেয়ে।
শিক্ষাজীবন
জনাব আসিম তার প্রাক-প্রথমিক ও প্রাথমিক পড়াশুনা তার নিজ জেলা মানিকগঞ্জ থেকেই সম্পন্ন করেন। তারপর ২০০৭ সালে ঢাকা সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন তিনি।
কর্মজীবন
২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের পরের বছরেই অর্থাৎ ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার ও জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। চাকরিরত অবস্থায় জাওয়াদ বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত ছিলেন। তার পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি মফিজ ট্রফি, বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি ও বিমান বাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এছাড়াও ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বিশেষ কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতীয় বিমান বাহিনীর চিফ অব এয়ারস্টাফস ট্রফি ফর বেস্ট ইন ফ্লাইং অর্জন করেন।
অর্জন
জনাব জাওয়াদ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে ওয়াটারম্যানশীপ কোর্স, বেসিক লোকাল এডমিন কোর্স, ফিজিক্যাল ফিটনেস কোর্স, জেনারেল সারভাইভাল কোর্স, অপস ইন্টেলিজেন্স কোর্স, ফরওয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার কোর্স, এলিমেন্টারি সেফটি কোর্স, বেসিক জেট এন্ড ফাইটার কনভার্সন কোর্স, অপস কনভার্সন কোর্স, এলিমেন্টারি লিডারশীপ কোর্স, ফ্লাইং ইনসট্রাকটরস কোর্স, ফ্লাইং সুপারভিশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট কোর্স, ফিজিক্যাল ইনডকট্রিনেশন কোর্স, জুনিয়র কমান্ড এন্ড স্টাফ কোর্স, অপস্ কনভার্সন কোর্স এন্ড রেয়ার ককপিট ক্লিয়ারেন্স কোর্স ও ফ্লাইট লীডারশীপ কোর্স সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে এভিয়েশন ইনসট্রাকটরস পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
দুর্ঘটনার বিবরণ
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ নামের একটি প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ০৯/০৫/২০২৪ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামস্থ জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। বিমানে উপস্থিত ছিলেন ০২ জন বৈমানিক উইং কমান্ডার মোঃ সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। বিমানে আগুন ধরার জন্য বৈমানিকদ্বয় বিমানকে জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে পাশে অবস্থিত কর্ণফুলী নদীর মোহনার দিকে নিয়ে যান ও জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। এসময় স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ এর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গাতে নেয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বাঁচানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পর তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ইয়াক-১৩০ (Yak-130) কি ?
ইয়াক ১৩০ (Yak-130) একটি যুদ্ববিমান যা রাশিয়ার সমরাস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইরকুত করপোরেশন দ্বারা নির্মিত আনুমানিক ১৯৯৫ সালের দিকে। যুদ্ধবিমানটি সাবসনিক দুই সিটের উন্নত জেট প্রশিক্ষণ এবং হালকা যুদ্ধবিমান। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার যুদ্ধবিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করে। এরপর ২০০২ সালে এটি রুশ সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রধান আকাশযান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। তারপর ২০১৫ সালে এটি প্রথম বাংলাদেশে আসে ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এটি ব্যবহার শুরু করে।
স্কোয়াড্রন লিডার কি ?
আসিম জাওয়াদ নামের অর্থ কি ?
আসিম/আসেম অর্থ ত্রাণকর্তা, রক্ষাকর্তা, অভিভাবক, রক্ষাকারী আর জাওয়াদ অর্থ উদার, দয়ালু প্রভৃতি।