রয়েল এনফিল্ড বাইক বাংলাদেশ বিস্তারিত । royal enfield bike bangladesh details 2024

সম্প্রতি ইফাদ মটরস এর মাধ্যমে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বা রয়্যাল এনফিল্ড (royal enfield) কোম্পানী মোটরসাইকেল বিক্রি শুরু করেছে যার ফলে বাইকারদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আনন্দ বিরাজ করছে। চলুন জেনে নিই বাইকটি সম্পর্কে বিস্তারিত….

একনজরে:

রয়েল এনফিল্ড বা রয়্যাল এনফিল্ড (royal enfield) মোটরসাইকেল জগতে একটি খুবই পরিচিত মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কোম্পানী যারা বিভিন্ন ধরনের ক্লাসিক মডেলের মোটরসাইকেল তৈরী ও বাজারজাত করে থাকে। সাধারণত ৩৫০ সিসি এর মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন ক্লাসিক ডিজাইনের জন্য মোটরসাইকেল প্রেমীদের কাছে এক স্বপ্নের নাম রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল (royal enfield motorcycle)।

ইফাদ মোটরস নামক একটি বাংলাদেশী গ্রুপঅব প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে কুমিল্লায় কারখানা স্খাপনের মাধ্যমে রয়্যাল এনফিল্ড তাদের ০৪ টি মডেলের মোটরসাইকেল প্রি বুকিংয়ের মাধ্যমে বিক্রয় শুরু করেছে।

আজকের এই ব্লগে আপনারা রয়্যাল এন ফিল্ড এর ০৪ টি মডেলের বাইক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন ও কিভাবে বুকিং করবেন তাও জানতে পারবেন। তাই ধৈর্য্য ধরে ব্লগটি পড়তে থাকুন…

https://www.ifadgroup.com/ifad-motors-ltd
https://www.ifadgroup.com/ifad-motors-ltd

কিভাবে রয়েল এনফিল্ড বাইক বুকিং করবেন?

বুকিং লিংক এ ক্লিক করে https://prebook.ifadmotors.com/ এ গেলে নীচের ছবির মত পেজ এ গিয়ে মোবাইল নং ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে খুব সহজেই আপনি রয়েল এনফিল্ড বাইক বুকিং করতে পারবেন।

https://prebook.ifadmotors.com/
https://prebook.ifadmotors.com/

বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইকের মডেলসমূহ:

প্রথমত কুমিল্লায় ইফাদ মটরস এর কারখানায় মোট ০৪ ধরনের রয়েল এনফিল্ড বাইক প্রস্তুত ও বাজারজাত করা হবে বলে ইফাদ মটরস এর মাধ্যমে জান গেছে। মডেলগুলো হল:

  • হান্টার (royal enfield hunter 350)
  • ক্লাসিক (royal enfield classic 350)
  • বুলেট (royal enfield bullet 350)
  • মিটিউর (royal enfield meteor 350)

১। রয়েল এনফিল্ড হান্টার (royal enfield hunter 350):

ইফাদ মটরস সূত্র মতে , রয়েল এনফিল্ড হান্টার (royal enfield hunter 350) মডেলের বাইকটি তরুণদের মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ও সাড়াজাগানো একটি বাইক। বেশিরভাগ তরুণদের ক্রাশ বাইক এটি। রয়েল এনফিল্ডের আর ৩ টি মডেলের তুলনায় ওজন ও দামে একটু হালকা এই বাইকটি।

বিস্তারিত তথ্যসমূহ:

মডেলের নাম হান্টার (royal enfield hunter 350)
দাম৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা মাত্র
সিসি৩৫০
ইঞ্জিন ফুয়েল ইঞ্জেকটর (এফআই)
ট্যাংকির ধারণক্ষমতা ১৩.৫ লিটার
ওজন১৮১ কেজি
সিট ০২ জন
ব্রেক এন্টি লক, ডাবল ডিস্ক, এবিএস
মাইলেজ ২৫-৩৫ কি.মি. প্রতি লিটার
মিটার এনালগ
চাকা স্পকবিহীন ঢালাই লোহার রিং
কিকারনেই
হেডলাইটহ্যালোজেন

২। রয়েল এনফিল্ড ক্লাসিক (royal enfield classic 350):

রয়েল এনফিল্ড কোম্পানীর সবথেকে বেশি বিক্রিত মডেলটি হল ক্লাসিক (royal enfield classic 350)।

বিস্তারিত তথ্যসমূহ:

মডেলের নাম ক্লাসিক (royal enfield classic 350)
দাম৪ লক্ষ ০৫ হাজার টাকা মাত্র
সিসি ৩৫০
ইঞ্জিন ফুয়েল ইঞ্জেকটর (এফআই)
ট্যাংকির ধারণক্ষমতা  ১৩.৫ লিটার
ওজন১৯৫ কেজি
সিট ০১ জন
ব্রেক এন্টি লক, ডাবল ডিস্ক, এবিএস
মাইলেজ ২৫-৩৫ কি.মি. প্রতি লিটার
মিটার এনালগ
চাকা স্পক রিং
কিকারনেই
হেডলাইটহ্যালোজেন

৩। রয়েল এনফিল্ড বুলেট (royal enfield bullet 350):

(royal enfield bullet 350) বুলেট মডেলটি হল রয়েল এনফিল্ড কোম্পানীর একটি প্রতিশ্রুতির নাম। সবথেকে বেশি টেকসই ও ঐতিহ্য বহন করে এই বাইকটি। রয়েল এনফিল্ড সর্বপ্রথম এই বাইকটি দিয়েই উৎপাদন শুরু করে। যেকোন প্রতিকুল পরিবেশে সবথেকে বেশি টিকে থাকার সুনাম এই মডেলটির। এখনো বিশ্বের সবথেকে পুরাতন রয়েল এনফিল্ড বাইক মডেলের মধ্যে বুলেটটিই সবথেকে বেশি টেকসই হিসেবে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:

বিস্তারিত তথ্যসমূহ:

মডেলের নাম বুলেট (royal enfield bullet 350)
দাম৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা মাত্র
সিসি ৩৫০
ইঞ্জিন ফুয়েল ইঞ্জেকটর (এফআই)
ট্যাংকির ধারণক্ষমতা  ১৩.৫ লিটার
ওজন১৯৫ কেজি
সিট ০২ জন
ব্রেক এন্টি লক, ডাবল ডিস্ক, এবিএস
মাইলেজ ২৫-৩৫ কি.মি. প্রতি লিটার
মিটার এনালগ
চাকা স্পক রিং
কিকারনেই
হেডলাইটহ্যালোজেন

৪। রয়েল এনফিল্ড মিটিউর (royal enfield meteor 350):

রয়্যাল এনফিল্ডের আপডেট মডেলগুলো হল মিটিউর। এগুলোকে তেমন ঐতিহ্যবাহী বলা যায়না। এগুলো সম্প্রতি বা অন্য মডেলের তুলনায় কিছুদিন আগে তৈরী করা হয়েছে বলা যায়। মিটিউর মডেলের বেশ কটি ভেরিয়েন্ট রয়েছে। প্রত্যেকটিরই নজরকাড়া ডিজাইন।

বিস্তারিত তথ্যসমূহ:

মডেলের নামমিটিউর
দাম৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা মাত্র
সিসি ৩৫০
ইঞ্জিন ফুয়েল ইঞ্জেকটর (এফআই)
ট্যাংকির ধারণক্ষমতা  ১৩.৫ লিটার
ওজন১৯১ কেজি
সিট ০২ জন
ব্রেক এন্টি লক, ডাবল ডিস্ক, এবিএস
মাইলেজ  ২৫-৩৫ কি.মি. প্রতি লিটার
মিটার এনালগ
চাকা স্পক রিং/এলোই রিং ঢালাই লোহা
কিকারআছে
হেডলাইটহ্যালোজেন

কেন এত জনপ্রিয় এই বাইকগুলো ?:

রয়েল এনফিল্ড বাইকের খ্যাতি মূলত এর ইতিহাস, ঐতিহ্য, গুণগত মান, এবং স্থায়ীত্বের জন্য। শক্তিশালী উচ্চ সিসির ইঞ্জিন এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে এটি তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই বাইকগুলোর মজবুত গঠন এবং যান্ত্রিক নির্ভরযোগ্যতার কারণে বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীর কাছেও এটি অত্যন্ত সমাদৃত। ভারী ধাতব কাঠামো ও শক্তিশালী ফ্রেমের কারণে কঠিন পরিস্থিতিতেও এই বাইকটি টিকে থাকতে সক্ষম। দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য রয়েল এনফিল্ড একজন আদর্শ সঙ্গী হিসেবে পরিচিত; রাস্তার অবস্থা যেমনই হোক, এটি বাইকারদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য নাম। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরেও রয়েল এনফিল্ডের ব্যবহার ব্যাপক।

কেন আপনার রয়েল এনফিল্ডের বাইক কেনা উচিত ?

মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী গঠন: রয়েল এনফিল্ড বাইকে ব্যবহার করা হয় ভারী ধাতু এবং শক্তিশালী ফ্রেম, যা কঠোর পরিবেশেও বাইককে দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। বিভিন্ন ধরনের রাস্তায় এটি চমৎকার পারফর্ম করে।

শক্তিশালী ইঞ্জিন ও কার্যক্ষমতা: রয়েল এনফিল্ডের বাইকে উচ্চ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়, যা গতি ও শক্তির সমন্বয়ে প্রস্তুত। শক্তিশালী ও কার্যকরী বাইক খুঁজছেন, এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি আদর্শ বিকল্প।

ক্লাসিক ও আকর্ষণীয় ডিজাইন: ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন ও প্রিমিয়াম ফিলের কারণে রয়েল এনফিল্ড বাইকগুলো খুবই আকর্ষণীয়। এর ক্লাসিক লুক অনেকের নজর কাড়ে।

দীর্ঘ যাত্রার সঙ্গী: লং রাইড বা অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরের জন্য রয়েল এনফিল্ড আদর্শ সঙ্গী হিসেবে পরিচিত। আরামদায়ক আসন ও টেকসই কাঠামো এটিকে বাইকারদের প্রথম পছন্দের মধ্যে রাখে।

বিশ্বাসযোগ্য গুণমান: দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং নির্ভরযোগ্য পারফর্মেন্সের জন্য রয়েল এনফিল্ড একটি আস্থার নাম। এর মেকানিক্যাল স্থায়ীত্ব বাইকারদের মাঝে এর প্রতি বিশেষ আস্থা তৈরি করেছে।রয়েল এনফিল্ড বাইক এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়, যা সাধারণত অন্যান্য বাইক ব্র্যান্ডে পাওয়া যায় না।

কেন আপনি রয়েল এনফিল্ডের বাইক কিনবেন না?

রয়েল এনফিল্ড বাইক কেনার আগে কিছু সীমাবদ্ধতা মাথায় রাখা উচিত। চলুন দেখে নিই

মধ্যবিত্ত: আপনি যদি মধ্যবিত্ত হন এবং কর্মজীবি হন তাহলে রয়েল এনফিল্ড বাইক আপনার জন্য না। কারণগুলো নীচে পড়ুন..

ওজন বেশি: রয়েল এনফিল্ডের বাইকগুলো সাধারণত বেশ ভারী হয়, যা শহরের ট্রাফিক বা ভিড়ে চালানো কঠিন হতে পারে। নতুন বা কম অভিজ্ঞ রাইডারদের জন্য এটি সামলানো একটু কষ্টকর হতে পারে।

কম মাইলেজ: উচ্চ সিসির ইঞ্জিনের কারণে রয়েল এনফিল্ডের জ্বালানি খরচ বেশি, তাই যারা কম খরচে বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে চান, তাদের জন্য এটি সুবিধাজনক নয়।

বেশি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন: এর মজবুত গঠন ও যন্ত্রাংশের কারণে বাইকটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ চায়। সময় এবং বাজেটের সীমাবদ্ধতা থাকলে এটি সমস্যার কারণ হতে পারে।

উচ্চ মূল্য: সাধারণ বাইকের তুলনায় রয়েল এনফিল্ডের দাম বেশ বেশি। যারা কম বাজেটে ভালো মানের বাইক খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি সাশ্রয়ী নাও হতে পারে।

ডিজাইন পছন্দ নাও হতে পারে: রয়েল এনফিল্ডের ক্লাসিক লুক সবার কাছে আকর্ষণীয় নাও লাগতে পারে। যারা আরও আধুনিক বা স্পোর্টি ডিজাইন পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি কমপক্ষে আকর্ষণীয় হতে পারে।

কম্পন: এই বাইকের ইঞ্জিনের ক্ষমতার জন্য এর কম্পনের পরিমাণও বেশি। গাড়ীর এই কম্পন আপনার অসুস্থতার কারণও হতে পারে।

রেসিং মনমানসীকতা: বর্তমানে সমাজে কিছু বাইকারদের ভেতরে সড়কে রাফ গাড়ীচালনা ও রেস খেলার মনমানসীকতা দেখা যায়। আপনানিও তাদের একজন হলে বা যদি গাড়িতে উঠলেই যদি আপনার মনে হয় রকেটে উঠেছেন এবারে সর্বোচ্চ স্পীড তুলবেন তাহলে এ গাড়ী আপনার না কেনাই ভাল।

উপসংহার:

সবকিছুরই ভাল খারাপ উভয় দিক আছে। রয়েল এনফিল্ড বাইকও তার বাইরে নয়। রয়েল এনফিল্ড একটি ঐতিহ্যবাহী, মজবুত এবং শক্তিশালী বাইক, যা লম্বা ভ্রমণ ও অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বহু বাইকারের পছন্দের শীর্ষে। তবে এর বেশি ওজন, কম মাইলেজ, এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনের কারণে এটি সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। ক্লাসিক ডিজাইন ও মজবুত বাইকের অভিজ্ঞতা পেতে যারা আগ্রহী এবং নিয়মিত যত্ন নিতে রাজি, তাদের জন্য রয়েল এনফিল্ড একটি আদর্শ সঙ্গী। অন্যদিকে, যাদের বেশি মাইলেজ বা হালকা বাইকের প্রয়োজন, তাদের জন্য এটি সঠিক পছন্দ নাও হতে পারে।

কিভাবে রয়েল এনফিল্ড বাইক বুকিং করবেন?

বুকিং লিংক এ ক্লিক করে https://prebook.ifadmotors.com/ এ গেলে নীচের ছবির মত পেজ এ গিয়ে মোবাইল নং ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে খুব সহজেই আপনি রয়েল এনফিল্ড বাইক বুকিং করতে পারবেন।

বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইকের কি কি মডেল রয়েছে?

হান্টার (royal enfield hunter 350)
ক্লাসিক (royal enfield classic 350)
বুলেট (royal enfield bullet 350)
মিটিউর (royal enfield meteor 350)

Leave a Comment

© whoisviralbd.com 2025 All Rights Reserved.