সূচী:
জাতীয় সংগীত একটি দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতিক এই জাতীয় সংগীত (national anthem of bangladesh)। দেশকে সম্মান জানাতে, দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন এবং দেশের সার্বিক কল্যানে যারা অবদান রাখেন বা রেখে চলেছেন সবাইকে সম্মান, শ্রদ্ধা জানাতে এছাড়াও দেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুন্ন রাখতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। কোন দেশ জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় পতাকা তোলার মাধ্যমে বিশ্বকে জানান দেয় যে, পৃথিবীর বুকে সে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সেও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। সর্বোপরি জাতীয় সংগীত প্রত্যেকের মনে দেশপ্রেম জাগানোর মূল সোপান।
ভূমিকা:
বাংলাদেশ সহ ভারত ও নেপালের জাতীয় সংগীত রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যার রচনা এক সঙ্গে তিন দেশের জাতীয় সংগীত। আমাদের জাতীয় সংগীতের (national anthem of bangladesh) প্রথম লাইন “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি”। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পুরোটা ২৫ লাইনের। তবে এর মধ্যে থেকে মাত্র ১০ লাইন গাওয়া হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (national anthem of bangladesh) সম্পূর্ণ নিম্নরূপ:
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে—
দে গো তোর পায়ের ধুলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত mp3 download:
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf download:
উপসংহার:
জাতীয় সংগীত (national anthem of bangladesh), স্মৃতি সৌধ, শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা ইত্যাদি একটি জাতির অমূল্য সম্পদ। দেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রথম স্থান এটি। মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয় এগুলোর মাধ্যমে। দেশ কি, দেশ কতটা জরুরী, স্বাধীনতা কি, কেন, কিভাবে এবং কেন আমরা দেশকে ভালোবাসব এসব বুঝতে জাতীয় সংগীত, স্মৃতি সৌধ, শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা ইত্যাদির গুরুত্ব অপরিসীম। আসুন আমরা সবাই জাতীয় সংগীত, স্মৃতি সৌধ, শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা ইত্যাদির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি, করতে শেখাই।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত মোট কত লাইনের ?
উত্তর: ২৫ লাইনের।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কত লাইন পর্যন্ত গাওয়া হয় ?
উত্তর: ১০ লাইন
প্রশ্ন: বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা কে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রশ্ন: আমার সোনার বাংলা গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কবে গৃহীত হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ১ মার্চ স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ঐ সালের ৩ মার্চ ঢাকা পল্টন ময়দানে এক জনসভায় এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এরপর একই সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সংগীত হিসাবে গাওয়া হয়।