বর্তমানে মোটরসাইকেল নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। আর বাইক আছে মানে তার জন্য তেল, মবিল/ইঞ্জিন অয়েল/লুব্রিকেন্ট/motorcycle mobil কিনতেই হয়। তাই বিভিন্ন জন বিভিন্ন ব্রান্ডের মবিল ক্রয় করে থাকেন। তবে খুব কম লোকই আছেন যারা জেনে বুঝে মবিল/ইঞ্জিন অয়েল/লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করি। আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জানতে পারবেন কোনটি ভাল মানের মবিল, কেন উঠাবেন, কত কি.মি. চালাবেন, দাম কেমন ইত্যাদি। তো চলুন শুরু করি….
সূচী:
কোন motorcycle mobil মবিল কিনবেন, কেন কিনবেন ?
বাজারে অনেক নামী ব্রান্ডের মবিল কিনতে পাওয়া যায়। যেমন: সুপারভি, মতুল, হ্যাভোলিন, এপিঅয়েল, সাউদি, ফুক্স, হোন্ডা, ইয়ামাহা, হিরো, ক্যাস্ট্রল, ফোরটি প্রভৃতি। আমি একজন বাইক চালক হিসেবে উপরের সকল ব্রান্ড ব্যবহার করে দেখেছি। উপরের কোন ব্রান্ডে আমি বর্তমান ব্রান্ডের মত মশৃণতা পাইনি। হ্যাঁ, সেই কাঙ্খিত ব্রান্ডের নাম-ভিসকো 3000 । জানিনা বিশ্বাস করবেন কিনা, আপনি যদি এখনও এটি আপনার গাড়িতে উঠিয়ে না থাকেন তবে আমার কথা শুনে একবার উঠিয়ে চালিয়ে দেখুন।
আমি দালালি করছিনা। আপনি অন্য সব ব্রান্ড ভুলে যেতে বাধ্য হবেন। আর সবথেকে বড় কথা এটি সাশ্রয়ীও। কারণ আপনি এটি ৩০০০ কি.মি. অনায়াসে চালাতে পারবেন। আমি চালিয়েছি জানি। 2000 কি.মি. চালানোর পরও ইঞ্জিনের গীয়ার পরিবর্তনের মশৃণতা এতটুকু পরিবর্তন পাইনি। মনে হয় যেন মবিল নতুনই আছে। অন্য ব্রান্ড দেখবেন ১০০০ চালানোর পরই গীয়ার চেঞ্জের সময় খট খট শব্দ করে, মনে হয় ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু ভিসকোতে শুধু মধুই মধু।
এটি মুলত একটি মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল। এর অনকে ভেরিয়েন্ট আছে। যেমন: 10w30, 10w40, 20w40, 20w50 আরও অনেক। এটার কোনটা আপনার গাড়ির জন্য দরকার, কেন দরকার, কিভাবে বুঝবেন তা জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন। সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
- তাইজুল ইসলাম: একজন প্রতিভাবান বাংলাদেশী ক্রিকেটার
- ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু: হিন্দু জাগরণ ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত
- ঢামেকের ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা: এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা । papia akter sorna 2024
- বৈভব সূর্যবংশী: ভারতীয় ক্রিকেটের উদীয়মান তারকা । Vaibhav Suryavanshi Rising star of Indian cricket
- নিঝুম মজুমদার-হারপিক মজুমদার কে ? কেন তাকে এই নামে ডাকা হয় ? Why is Nijhoom Majumder called Harpik Majumdar 2024?
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল: গুরুত্ব, ধরণ, এবং সঠিক ব্যবহারের পরামর্শ
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল বা লুব্রিকেন্ট মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের মসৃণ ও দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক মানের এবং পরিমাণের ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব, কর্মক্ষমতা, এবং জ্বালানি দক্ষতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এই নিবন্ধে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং সঠিক ব্যবহারের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আমরা কেন ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি?
ইঞ্জিন অয়েল মূলত মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের ভেতরের অংশগুলোকে লুব্রিকেট করে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। এর প্রধান কাজগুলো হলো:
লুব্রিকেশন বা তেলাক্তকরণ: ইঞ্জিনের চলমান অংশগুলোকে মসৃণভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, ফলে অংশগুলোর মধ্যে ঘর্ষণ কমে আসে। এই ঘর্ষণ কমানোর ফলে ইঞ্জিনের অংশগুলো কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ওভারহিটিং এড়ানো যায়।
ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখা: ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে কাজ করার সময় প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। ইঞ্জিন অয়েল এই তাপকে শুষে নিয়ে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ময়লা অপসারণ: ইঞ্জিনের ভেতরে উৎপন্ন ধূলিকণা এবং অন্যান্য ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে সাহায্য করে, যা ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব ও কর্মক্ষমতা বজায় রাখে।
জং প্রতিরোধ: ইঞ্জিনের ধাতব অংশগুলোকে জং থেকে রক্ষা করে, যা ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বাড়ায়।
মোটরসাইকেল ইঞ্জিন অয়েলের ধরন
বাজারে সাধারণত তিন ধরনের ইঞ্জিন অয়েল পাওয়া যায়। সেগুলো হলো:
মিনারেল অয়েল: এই ধরনের অয়েল প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি করা হয়। মিনারেল অয়েল সাধারণত পুরনো বা কম পারফরম্যান্সের ইঞ্জিনের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা হলেও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বা আধুনিক ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত নয়।
সেমি-সিন্থেটিক অয়েল: এটি মিনারেল এবং সিন্থেটিক অয়েলের মিশ্রণ। সেমি-সিন্থেটিক অয়েল স্বাভাবিক ইঞ্জিনের জন্য কার্যকর এবং মিনারেল অয়েলের চেয়ে বেশি স্থায়িত্ব প্রদান করে।
সিন্থেটিক অয়েল: এটি সম্পূর্ণভাবে রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত, যা ইঞ্জিনের ভেতরের তাপ ও চাপ সহ্য করতে সক্ষম। আধুনিক ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল ইঞ্জিনের জন্য সিন্থেটিক অয়েল আদর্শ।
ইঞ্জিন অয়েলের গ্রেড ও পুরুত্ব
ইঞ্জিন অয়েলের গ্রেড সাধারণত SAE (Society of Automotive Engineers) মানদণ্ড অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, SAE 10W-40 একটি সাধারণ ইঞ্জিন অয়েলের গ্রেড। এই ক্ষেত্রে “10W” ঠান্ডা আবহাওয়ায় অয়েলের পুরুত্ব এবং “40” গরম অবস্থায় অয়েলের পুরুত্ব নির্দেশ করে। সঠিক গ্রেড নির্বাচন করতে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি:
আবহাওয়া: ঠান্ডা অঞ্চলে হালকা বা পাতলা অয়েল যেমন 10W-30, এবং গরম অঞ্চলে পুরু অয়েল যেমন 20W-50 ব্যবহার করা উচিত।
ইঞ্জিনের প্রয়োজনীয়তা: প্রতিটি ইঞ্জিনের গঠন ও চাহিদা ভিন্ন, তাই ম্যানুয়াল অনুযায়ী সঠিক গ্রেডের অয়েল ব্যবহার করতে হবে।
ইঞ্জিন অয়েলের সঠিক পরিমাণ এবং প্রতিস্থাপন
ইঞ্জিন অয়েলের পরিমাণ সঠিকভাবে মেনে চলা ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল এবং কর্মক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত অয়েল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনের ভেতরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়, আবার কম ব্যবহার করলে ঘর্ষণ বেড়ে যায়। ইঞ্জিনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী অয়েলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। প্রত্যেক মোটরসাইকেল কোম্পানী নির্ধারিত নির্দিষ্ট পরিমাণ মবিল ব্যবহার করা উচিত। বেশি দিলে ইঞ্জিন বেশি গরম ও কম দিলে ঘর্ষনের ফলে ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রতিস্থাপনের সময়
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময় ইঞ্জিনের ধরণ ও মোটরসাইকেলের ব্যবহার পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত বাজারের বিভিন্ন 500-550 টাকা দামের ১ লিটার বোতলের মবিলগুলো প্রতি 1000-1500 কিলোমিটার পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা উচিত। তবে ভিসকো 3000 এর ক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে 3000 কি.মি. চালাতে পারবেন কোন সন্দেহ ছাড়াই।
ইঞ্জিন অয়েলের সঠিক ব্যবহার: কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
সঠিকভাবে ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারের জন্য নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করা উচিত:
নিয়মিত অয়েল লেভেল চেক করুন: মোটরসাইকেল চালানোর আগে প্রতিদিন ইঞ্জিন অয়েলের লেভেল পরীক্ষা করা জরুরি।
মানসম্মত অয়েল ব্যবহার করুন: স্থানীয় মানহীন ব্র্যান্ডের অয়েল ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্র্যান্ডেড ও মানসম্পন্ন অয়েল ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক।
ইঞ্জিনের ধরনের উপর ভিত্তি করে অয়েল নির্বাচন করুন: রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ চালানোর জন্য উচ্চ ভিস্কোসিটির অয়েল নির্বাচন করা উচিত।
সঠিক ইঞ্জিন অয়েল নির্বাচন
প্রতিটি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন আলাদা, তাই এর চাহিদাও ভিন্ন। সঠিক ইঞ্জিন অয়েল নির্বাচন করা হলে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব। সঠিক ইঞ্জিন অয়েল/মবিল হিসেবে নি:সন্দেহে ভিসকো 3000 নিন। অন্য সব ব্রান্ড ভুলে যাবেন আশা করি। যদি আপনার নতুন গাড়ী হয়ে থাকে তবে 10w40 নিয়ে ৩০,০০০০ কি.মি. পর্যন্ত চালান। তারপর গ্রেড চেঞ্জ করে 20w50 তুলে চালাতে থাকুন।
ইঞ্জিন অয়েল নিয়ে কিছু ভুল ধারণা
ইঞ্জিন অয়েল সম্পর্কিত কয়েকটি ভুল ধারণা রয়েছে যা মোটরসাইকেলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যেমন:
প্রায়ই অয়েল পরিবর্তন করা ভালো: ম্যানুয়াল অনুযায়ী অয়েল পরিবর্তনই যথেষ্ট। বারবার অযথা অয়েল পরিবর্তন করলে ইঞ্জিনে সমস্যা হতে পারে।
বেশি পুরু অয়েল সবসময় ভালো: বেশি পুরু অয়েল সব ইঞ্জিনের জন্য উপযোগী নয়। প্রতিটি ইঞ্জিনের জন্য সঠিক ভিস্কোসিটি অনুযায়ী অয়েল প্রয়োজন।
কমদামি অয়েল সাশ্রয়ী: কম দামের মানহীন অয়েল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়।
উপসংহার
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল সঠিকভাবে নির্বাচন ও ব্যবহারের মাধ্যমে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা, আয়ুষ্কাল এবং জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব। ইঞ্জিনের ধরন, পরিবেশ এবং ম্যানুফ্যাকচারারের নির্দেশিকা অনুসারে সঠিক অয়েল নির্বাচন করলে মোটরসাইকেলের পারফরম্যান্স বাড়বে এবং ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।
মোটরসাইকেলের জন্য কোন মবিল ভালো ?
নি:সন্দেহে Visco-3000