পঞ্চব্রিহী ধান যা একবার রোপন করে ০৫ বার ফসল উৎপন্ন করা যায় এমন ধান আবিস্কার করে সাড়া ফেলেছেন ড. আবেদ চৌধুরী (Dr. Abed Chowdhury) । চলুন তার আরও উদ্ভাবন সমূহ জেনে নিই..
সূচী:
একনজরে ড. আবেদ চৌধুরী (Dr. Abed Chowdhury):

পূর্ণ নাম | ড. আবেদ চৌধুরী (Dr. Abed Chowdhury) |
পিতা | আব্দুল মন্নান চৌধুরী |
মাতা | হাফিজা খাতুন |
স্ত্রী | জানা যায়নি |
সন্তান | জানা যায়নি |
জন্ম তারিখ | ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ |
স্থায়ী ঠিকানা | সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি গ্রামে |
বর্তমান ঠিকানা | অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা |
পেশা | জিনবিজ্ঞানী, ধান গবেষক ও লেখক |
উচ্চতা | ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (আনুমানিক) |
ওজন | ৬৫ কেজি (আনুমানিক) |
বয়স | ৬৮ বছর |
ফেসবুক পেজ লিংক | জানা যায়নি |
ইনস্টাগ্রাম লিংক | জানা যায়নি |
ইউটিউব লিংক | জানা যায়নি |
ফোন নাম্বার | জানা যায়নি |
ইমেইল | জানা যায়নি |
ওয়েবসাইট লিংক | জানা যায়নি |
- তাইজুল ইসলাম: একজন প্রতিভাবান বাংলাদেশী ক্রিকেটার
- ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু: হিন্দু জাগরণ ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত
- ঢামেকের ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা: এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা । papia akter sorna 2024
- বৈভব সূর্যবংশী: ভারতীয় ক্রিকেটের উদীয়মান তারকা । Vaibhav Suryavanshi Rising star of Indian cricket
- নিঝুম মজুমদার-হারপিক মজুমদার কে ? কেন তাকে এই নামে ডাকা হয় ? Why is Nijhoom Majumder called Harpik Majumdar 2024?
পরিচিতি:
আবেদ চৌধুরী আধুনিক জীববিজ্ঞানের মুখ্য গবেষক হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৭৫ সালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন এবং নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রাপ্ত করেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে অধ্যয়নশীল হন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন স্টেট ইনিস্টিটিউট অফ মলিকুলার বায়োলজি এবং ওয়াশিংটন স্টেটের ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ ইনিস্টিটিউটে উচ্চশিক্ষা প্রাপ্ত করেন।
১৯৮৩ সালে তার পিএইচ.ডি গবেষণাকালে রেকডি নামক জেনেটিক রিকম্বিনেশনের একটি নতুন জিন উদ্ভাবন করা হয়। এই উদ্ভাবনের পরবর্তীতে মার্কিন ও ইউরোপীয় গবেষণা সম্প্রসারিত হয়। অতএব, তিনি অযৌন বীজ উৎপাদন (এফআইএস) সম্প্রতি তিনটি নতুন জিন উদ্ভাবন করেন। এই উদ্ভাবিত জিনগুলির মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে বীজ উৎপাদন সম্ভব হয় যা অপরাজিত বীজের প্রতিস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার আবিষ্কার এপোমিক্সিসের সূচনা করেছে, যা পিতৃবিহীন বীজ উৎপাদন সম্ভব করে।
তিনি শিক্ষকতা ও গবেষণার জন্য অন্যান্য স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে যেমন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ফ্রান্সের একোল নর্মাল সুপেরিয়রে, সেই রকম প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ও গবেষণা করেছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থায় বিজ্ঞানীদের এক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যা গবেষণা সংক্রান্ত। ধান রোপনে তিনি পাঁচ বারের ধান সংগ্রহে গবেষণা করেছেন।
পঞ্চব্রিহী ধান:
পঞ্চ অর্থ পাঁচ আর ব্রিহী অর্থ ধান। মুলত পঞ্চব্রিহী এমন একটি ধান যা একবার রোপন করে বোরো একবার, আউশ দুবার ও আমন দুবার এই তিন মৌসুমে মোট ০৫ বার ধান সংগ্রহ করা যাবে। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশী জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী। পাঁচবার ফসল সংগ্রহ করা যায় বলে এর নামকরণ করা হয় পঞ্চব্রিহী। পঞ্চব্রিহী ধান প্রথমবার বোরো সিজনে লাগালে প্রায় প্রথমবার ১১০ দিন পরে এটা কাটা যাবে। এরপর বোরো ধান কাটার পরে ৪৫ দিন পরে আরেকবার ধান কাটা যাবে ও ৫০ দিন পরে আবার ধান কাটা যাবে তারপর আবার ৫০/৬০ দিন পরে আরেকবার ধান কেটে ফসল ঘরে তোলা যাবে।

আবেদ চৌধুরী ধানগাছের দ্বিতীয় জন্মের ওপর গবেষণা করেছেন প্রায় ১৪ বছর ধরে। তার চাওয়া অন্যান্য ফলের গাছ যেমন একবার লাগিয়ে বার বার ফলন পাওয়া যায় ও অনেকদিন ধরে পাওয়া যায়, তেমনি ধানগাছগুলো যেন দীর্ঘস্থায়ী ফলন ও তা থেকে কয়েকবার ফসল পাওয়া যায়। এ যাবৎ তিনি প্রায় ২০ ধরনের ভিন্ন জাতের ধানগাছ নিয়ে কাজ করেন। প্রথমে তিনি নতুন ধানের শিষ সংগ্রহ করেন, এবং তারপর ভিন্ন জাতের ১২টি ধানবীজ চাষ করেন।
বর্তমান কালের চাষপদ্ধতিতে জমিকে চারা রোপনের আগে বার বার চাষ করা ও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। এতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড ও মিথেন নিঃসরণ হয়। তবে পঞ্চব্রিহী ধান একবার চাষ করে আর কোন জমিচাষ ছাড়াই পাঁচবার ফলন পাওয়া যায়, তাই জমি আর চাষ দিতে হয় না। সুতরাং এতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড ও মিথেন নিঃসরণ কমবে। এছাড়াও এই ধান একবার লাগিয়ে ৫ বার ফসল পাওয়া যায় বলে এটিকে আগামী খাদ্য সংকট দূরীকরণের প্রধান হাতিয়ার বলে দাবী করেন ড. আবেদ। এতে কৃষকের ৪ বারের ধান রোপনের খরচ ও কষ্টও লাঘব হয়। যা কৃষকের শরীরবৃত্তীয় কষ্ট দূর করে।
আরও উদ্ভাবনসমূহ:
সোনালী ধান:
২০১৯ সালে তিনি একটি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছিলেন, যা সোনালি ধান নামে পরিচিত। এটি মূলত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। আমরা সবাই জানি ডায়াবেটিস রোগীদের ভাত খাওয়া নিষেধ। তবে সোনালী ধান এমন একটি ধানের জাত যার ভাত খেলেও রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করবে। এই ধানের গুণগত মান এবং সুস্থতা বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃতিও পেয়েছে।
সোনালী ধান কিনতে ০১৭৬৬-৩৭০৪৩৬ এবং ০১৭৬৬-৩৭০৭০৩ নম্বরে যোগাযোগ করুন।

রঙিন ভুট্টা:
ডাঃ আবেদ রঙিন ভুট্টা আবিষ্কার করেন যা লাল খয়েরি রঙের । ধান এবং গমের তুলনায় রঙিন ভুট্টার পুষ্টিমাণ খুবই বেশি। এটিকে নিউ নিউট্রেশন বলা যেতে পারে। ভুট্টায় কেরোটিন থাকার কারণে মূলত এর রং হলুদ হয়। তাই তিনি রঙিন ভুট্টার ক্লোন উদ্ভাবন করেন। রঙিন ভুট্টা ক্যান্সার প্রতিরোধক। বিশেষ করে শিশুদের দেহের পুষ্টি প্রয়োজনীয় পরিমাণে পূরণ করার জন্য এটি বিশেষ উপযোগী। রঙিন ভুট্টা সারা বছরে ৪ বার চাষ করা যায়। আবার খরিফ -১ ও খরিফ -২ মৌসুমেও ভুট্টা চাষ করা যায়।
আবেদ চৌধুরীর বইসমূহ:
- মানবজীনোম: মানুষের জিন জিনের মানুষ
- অনুভবের নীলনকশা
- Paradigm Shift
- Panchabrihi Mukti Harvest-Rice
- দূর্বা শিশির ও পর্বতমালা
- নির্বাচিত কবিতা
- Anguished River & Other Design
- স্বপ্ন সত্তা নদী ও অন্যান্য কবিতা
উপসংহার:
ড. আবেদ চৌধুরী তার প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে দেশে ফিরে নিজ গ্রামে একটি গবেষণাগার তৈরী করে সেখানকার কৃষক সহ সর্বস্তরের জনগণকে কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগীতা ও শিক্ষা প্রদান করছেন। তিনি বলেন তার থেকে কারো কিছু জানার বোঝার থাকলে তারা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এতে তার দ্বার সবসময় খোলা। আমরা সুস্থতা ও সাফল্য কামনা করি।
পঞ্চব্রিহী ধান কি ?
পঞ্চব্রিহী এমন একটি ধান যা একবার রোপন করে বোরো একবার, আউশ দুবার ও আমন দুবার এই তিন মৌসুমে মোট ০৫ বার ধান সংগ্রহ করা যাবে। প্রথমবার বোরো সিজনে লাগালে প্রায় প্রথমবার ১১০ দিন পরে এটা কাটা যাবে। এরপর বোরো ধান কাটার পরে ৪৫ দিন পরে আরেকবার ধান কাটা যাবে ও ৫০ দিন পরে আবার ধান কাটা যাবে তারপর আবার ৫০/৬০ দিন পরে আরেকবার ধান কেটে ফসল ঘরে তোলা যাবে।